বিশেষ প্রতিনিধি :
নরসিংদীর রায়পুরায় শুশুর কর্তৃক পুত্রবধুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের মীরকান্দি গ্রামে।
সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার (১০মে বুধবার) সকালে তুচ্ছঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।
ভুক্তভোগী স্বপ্না বেগম জানান, আমার বাবার বাড়ী ও শুশুর বাড়ী পাশাপাশি। আমার মা অসুস্থ থাকায় সিদ্ধ করা ধান উঠানে ছড়াইতে পারছিলেননা। খবর পেয়ে মা’কে সহযোগিতা করতে বাবার বাড়ীতে যায়। সেখান থেকে ধান ছড়াইয়া দিয়ে শুশুর বাড়ীতে পা রাখতে না রাখতেই আমার ননদ তানজিলা আমাকে আমার শুশুরের সামনেই গালমন্দ করতে থাকে। পরে আমি আমার শুশুরের কাছে বিচার প্রার্থী হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ননদ তানজিলা আমাকে গোবরমাখা বল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে আমি সাধ্যমত প্রতিহত করার চেষ্টা করি এবং গালমন্দ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার শুশুর প্রথমেই চুলের মুঠিতে ধরে পরে জামা ধরে টেনে ছিড়ি ফেলে এবং গালে বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়াতে থাকে এবং আমাকে উলঙ্গ করার চেষ্টা করে। এরা যে পূর্ব থেকেই আমার উপর রেগে উৎপেতে আছে আমার জানা ছিলনা। এসময় আমার শাশুড়ী দৌড়ে এসে আমার শুশুরকে না সরিয়ে আমার কোমরে, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাথি,কিল ঘুষি দেয়। আমার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করায়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী স্বপ্না বেগমের বাবা,মা উভয়ে জানান, মেয়ের বিয়ে দেয়ার ছয়মাস, একবছর ভালই কাটছিলো। তার পর থেকেই শুরু হয় মেয়ের উপর নির্যাতন। সংসার জীবনে আমার মেয়ের সংসারে তিনজন কন্যা সন্তান রয়েছে। তারপরও প্রতিনিয়ত চলে আমার মেয়ের উপর নির্যাতন। শুশুর হয়ে পুত্রবধুর উপর এমন নির্যাতন চলে যা লোক সমাজে বর্ননা করা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আইনী ব্যবস্থা নেবো। আইনের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।
উক্ত বিষয়ে গৃহবধূ স্বপ্না বেগমের শুশুর নূরু মিয়াকে বাড়ীতে পাওয়া যায়নি। স্বামী সাদ্দামের সাথে কথা বললে সে সব কিছু অস্বীকার করে জানান, ঘটনার সময় আমি বাড়ী ছিলামনা। পরে শুনেছি আমার স্ত্রী আমার বাবার সাথে খারাপ আচরণ করেছে। তাছাড়া আমার বাবা যদি কোন বেয়াদবি করেও থাকে তাহলে সে আমার কাছে না বলে বাবার বাড়ীতে চলে যাওয়াটা ঠিক হয়নি।
গৃহবধূ স্বপ্না বেগম উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের মীরকান্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে। তার শুশুরের নাম নূরু মিয়া, সে একই এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে।
এবিষয়ে স্বপ্না বেগমের বাবা বাদী হয়ে ৩’জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় একটি শ্লীলতাহানি ও নারী নির্যাতনের একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বাঁশগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আপন কুমার মজুমদার। তিনি জানান, তদন্তপূর্বক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।