নিজস্ব প্রতিবেদক :
নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানা পুলিশ কর্তৃক গৃহবধূ লাভলী বেগম হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান আসামী সুজন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গৃহবধূ লাভলী বেগম(৩০) তার স্বামী আসামী সুজন মিয়ার বাড়ী রায়পুরা থানাধীন মামুদপুরে থাকা অবস্থায় দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক কলহের জেরে গত (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ধারালো ছুরির আঘাতে পেটে জখম প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। গৃহবধূ লাভলী বেগম মৃত্যুবরণ করলে তার শশুর বাড়ীর লোকজন গৃহবধূ লাভলী বেগমকে মৃত অবস্থায় ফেলে রেখে এলাকা হতে পলাতক হয়। প্রাথমিকভাবে উক্ত ঘটনার খবর (০৬নভেম্বর২২) রায়পুরা থানা পুলিশ প্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাভলী বেগমের লাশের সুরতাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ মর্গে প্রেরণ করেন এবং ঘটনাস্থল হতে আলামত জব্দ করেন।
মৃত গৃহবধূ লাভলী বেগমের মাতা মালেকা বেগম (৭নভেম্বর২২) তারিখ দিবাগত রাত্রে আসামী সুজন মিয়া সহ সুজন মিয়ার পিতা-মাতা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। রায়পুরা থানার মামলা নং-০৮, তারিখ-০৮-১১-২০২২ তারিখ রুজু করা হয় এবং উক্ত মামলার তদন্তভার এসআই আমিনুল ইসলাম এর উপর ন্যাস্ত করা হয়।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, পিপিএম মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় এবং সহকারী পুলিশ সুপার, রায়পুরা সার্কেল সত্যজিৎ কুমার ঘোষ ও অফিসার ইনচার্জ, রায়পুরা থানা, মোঃ আজিজুর রহমানদ্বয়ের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এসআই আমিনুল ইসলাম গৃহবধূ লাভলী বেগম হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী সুজন মিয়া(৩৫) ০৭নভেম্বর ২০২২ তারিখ ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আটরশি দরবার শরীফ এর পাশ হতে গ্রেফতার করেন।
আসামী সুজন মিয়ার সাথে লাভলী বেগম(৩০) এর ১৩ বছর পূর্বে বিবাহ হয় এবং তাদের সংসারে ২টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। ৭বছর পূর্বে আসামী সুজন মিয়া বিদেশ গমণ করে এবং গত ২ মাস পূর্বে সে দেশে চলে আসে। বিদেশে গিয়ে সে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এবং ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়ে। সুজন মিয়ার স্ত্রী লাভলী বেগম মোবাইলে অন্য ছেলের সাথে কথা বলত বলে সে সন্দেহ করতে থাকে। এবিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন রাত্রে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরকিয়া নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হলে এক পর্যায়ে আসামী সুজন মিয়ার তার স্ত্রী লাভলী বেগম(৩০)কে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। পরবর্তীতে আসামী সুজন মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন সকলেই গৃহবধু লাভলী বেগমকে মৃত অবস্থায় একা রেখে পালিয়ে যায়। আসামী সুজন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামী সুজন মিয়া তার নিজের স্ত্রী গৃহবধূ লাভলী বেগমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে। আসামী সুজন মিয়াকে অদ্যই বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জেলা পুলিশ সুপার স্যারের দিক নির্দেশনায়, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারকি এবং রায়পুরা থানা পুলিশ টিম এর সম্বনিত প্রচেষ্টার ফলে গৃহবধূ লাভলী বেগম হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন, অন্যতম আসামী সুজন মিয়াকে মাত্র ১দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে সম্ভব হয়েছে। প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে জেলা পুলিশ।