নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদের বাকি আর মাত্র ১ দিন। ঈদে কোরবানি ও আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য দা, ছুরি, চাপাতি, বটিসহ অন্যান্য উপকরণ বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। এসব যন্ত্রপাতি শান দেয়া কিংবা নতুন ভাবে তৈরি করার জন্য একমাত্র মাধ্যম কামার। তাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন রায়পুরা উপজেলার কামাররা।
পুরোদমে বিক্রি শুরু হয়েছে এবং দিন-রাত চলছে টুং-টাং শব্দে কামারদের কাজ। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যান্যবারের চেয়ে এবার দা, বটি, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেশি বলে জানা গিয়েছে।
ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। আগুনের শিখায় তাপ দেয়া ও হাতুড়ি পেটানোর টুং-টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা, বটি, চাপাতি ও ছুরিসহ নানা রকমের অস্ত্র। পশু কোরবানিতে এসব দেশীয় অস্ত্র অতি প্রয়োজনীয়। একইভাবে চলছে মোটরচালিত মেশিনে শান দেয়ার কাজও।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন কামারশালায় দেখা যায়, অনেকেই পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত দা, বটি ও ছুরি শান দেয়ার জন্য নিয়ে আসছে কামারদের কাছে। তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়েও দোকানে বেড়েছে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যা।
রায়পুরা পৌর এলাকার হাসিমপুর কামারপাড়া মহল্লার উত্তম কর্মকর্তা, (৫৬)। তিনি জানান, ওনি প্রায় ৩২বছর যাবত এই পেশার সঙ্গে জড়িত বলে জানায় এবং তার বাবা এবং দাদা এই কাজ করেই তাদের জীবন পার করেছিল। বহু বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে ব্যবসা পরিবর্তন করে ফেলেছেন। কিন্তু ভিন্ন কিছু করার অভিজ্ঞতা না থাকায় কামারের পেশাই পড়ে রয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুর দাম বাড়লেও আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমাদের এ কাজের জড়িতদের মান বাড়েনি। কামাররা জানায়, ‘দা’ আকৃতি ও লোহা ভেদে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। ‘ছুরি’ ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। হাড় কোপানোর ‘চাপাতি’ প্রতিটি ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং পুরোনো ‘দা-বটি’শান দিতে বা লবণ পানি দিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বছরের প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন লৌহজাত জিনিস বানিয়ে গড়ে ৫০০- ৬০০ টাকা আয় হয়।কিন্তু ঈদের আগে লোহার অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। হাতে অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকায় আমরা এখন অনেক ব্যস্ত। এই ব্যস্ততা চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
মোস্তাফিজুর রহমান ফরিদ নামের এক ক্রেতা জানান, আমি একজন ফার্মেসী ব্যবসায়ী। ঈদের আগে কামারদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। নিজেদের পশু কোরবানীর জন্য কিছু ছুড়ি, দায়ের প্রয়োজন ছিলো। সেগুলোই আজকে এসে ক্রয় করে নিলাম।